বিশেষজ্ঞদের মতে দ্রুত ওজন কমাতে খালি পেটে সকালে ও রাতে ঘুমানোর আগে ১ গ্লাস পানির মধ্যে ২ চা চামচ চিয়া সিড ও ২ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
চিয়া সিড:
চিয়া সিড বা চিয়া বীজ মরুভূমিতে জন্মানো সালভিয়া হিসপানিকা (Salvia Hispanica) উদ্ভিদের বীজ। এই অতি উপকারি বীজটির আদি জন্মস্থান সেন্ট্রাল আমেরিকা এবং সেখানকার প্রাচীন আদিবাসি অ্যাজটেক জাতির খাদ্য তালিকায় এই বীজ অন্তর্ভুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রাচীন মায়া এবং অ্যাজটেক জাতির মানুষ চিয়া সিডকে সোনার থেকেও মূল্যবান মনে করত। তারা বিশ্বাস করত এটা তাদের শক্তি ও সাহস জোগাবে।
আমেরিকার United States Department of Agriculture (USDA) এর ন্যাশনাল নিউট্রিয়েন্ট ডাটাবেজ হতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী-প্রতি ৩.৫ আউন্স (১০০ গ্রাম) চিয়া সিডে রয়েছে: ৪৮৬ ক্যালোরি, ৬% পানি, ৪২.১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৩৪.৪ গ্রাম ফাইবার বা খাদ্যআঁশ,১৬.৫ গ্রাম প্রোটিন,০ গ্রাম চিনি, ০% গ্লুটেন, ৩০.৭ গ্রাম ফ্যাট।
v দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশী ক্যালসিয়াম।
v কমলার চেয়ে ৭ গুণ বেশি ভিটামিন সি।
v পালং শাকের চেয়ে ৩ গুণ বেশী আয়রন (লোহা)।
v কলার চেয়ে দ্বিগুণ পটাশিয়াম।
v স্যামন মাছের থেকে ৮ গুণ বেশী ওমেগা-৩।
1. চিয়া সিডে আছে ওমেগা-৩, যা হৃদরোগের ঝুঁকি ও ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে।
2. চিয়া বীজ ওজন কমাতে সহায়তা করে।
3. এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে।
4. এটি ব্লাড সুগার (রক্তের চিনি) স্বাভাবিক রাখে, ফলে ডায়াবেটিস ঝুঁকি কমায়।
5. চিয়া বীজ হাঁড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ উপকারি।
6. চিয়া সিড মলাশয় (colon) পরিষ্কার রাখে ফলে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
7. শরীর থেকে টক্সিন (বিষাক্ত পদার্থ) বের করে দেয়।
8. চিয়া সীড ভাল ঘুম হতে সাহায্য করে।
9. চিয়া বীজে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে যা কোষকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করতে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
10. চিয়া সিড পেটের প্রদাহজনিত বা গ্যাষ্টিক সমস্যা দূর করে।
11. চিয়া বীজ ক্যান্সার রোধ করে।
12. চিয়া সিড হজমে সহায়তা করে।
13. চিয়া বীজ হাঁটু ও জয়েন্টের ব্যথা দূর করে।
14. চিয়া সিড ত্বক, চুল ও নখ সুন্দর রাখে।
প্রতিটি ভাল খাবারের উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। তেমনি চিয়া সিডেরও কিছু উপকারিতা রয়েছেঃ
° চিয়া সিড দেহের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে রক্তচাপ কমায়। তাই অতিরিক্ত চিয়া সিড সেবনে রক্তচাপ বেশি কমে যাওয়ান সম্ভাবনা থাকে।
° চিয়া সিড প্রোটেস্ট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সারকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। সুতরাং এটি সীমিত পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত।
° অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে অস্বাভাবিকভাবে ওজন কমে যেতে পারে।
° এটি অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়ার ফলে বমি ভাব, এমনকি ডায়রিয়া হতে পারে। এছাড়াও অনেকের এটি খেলে এলার্জি দেখা দিতে পারে।
চিয়া সিডের নিজস্ব কোনো স্বাদ না থাকায় এটা সাধারণত সালাদ, কাস্টার্ড, স্মুদি যেকোনো খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়। তবে খাওয়ার আগে ৩০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দ্রুত ওজন কমাতে খালি পেটে সকালে ও রাতে ঘুমানোর আগে ১ গ্লাস পানির মধ্যে ১-২ চা চামচ চিয়া সিড ,১-২ চামচ মধু ও ১ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।